কক্সবাজারে খাদ্য গুদামে কামরুলের নেতৃত্বে চাল চুরি, আটক-২, সিলগালা

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল •

কক্সবাজার সদর খাদ্য গুদামে উপ-পরিদর্শক কামরুলের নেতৃত্বে চাল চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকালের দিকে গোপন সংবাদে ভিত্তিতে খবর পেয়ে অভিযান চালায় সদরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার মুক্তার।

অভিযানের খবর পেয়ে খাদ্য গুদাম থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় সদর খাদ্য গুদামের পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন ও উপ-পরিদর্শক কামরুলসহ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। পরে চাল চুরিকালে হাতেনাতে দুই শ্রমিককে আটক করা হয়।

আটকৃতরা হলেন- সমিতি পাড়ার নুরুচ্ছালামের পুত্র মোঃ মনির (৪০) ও নতুন বাহার ছড়ার বশির আহমদের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৪২)। পরে তাদেরকে সদর মডেল থানায় হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানান অভিযানকালে থাকা এসআই দেলোয়ার হোসেন।

এ বিষয়ে সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, সদর খাদ্য গুদামের অনিয়মের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজন শ্রমিককে আটক করা হয়। অফিসে আর কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে ৫নং গুদামটি সিলগালা করে দেয়া হয়। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্রে জানা যায়, খাদ্য গুদামে সংরক্ষিত থাকা প্রতি বস্তা থেকে ৩-৫ কেজি চাল কৌশলে জমায়েত করে উপ-পরিদর্শক কামরুলের নেতৃত্বে একটি চক্র। চুরি করা চাল ৫০ থেকে ১০০ বস্তা হলে বিভিন্ন অসাধু ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দেয়া কামরুল। পরে ওই টাকা পরিদর্শক থেকে শুরু করে ঝাড়–দারদের মধ্যে ভাগভাটোয়া হয়। এই চক্রে পরিদর্শক সালাহ উদ্দিনসহ রয়েছে অফিসের ঝাড়–দার ও শ্রমিকেরা। চুরি করা চাল ৫০ থেকে ১০০ বস্তা জমায়েত হলে বিভিন্ন ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। উপ-পরিদর্শক কামরুলের ইশারায় চলে সদর খাদ্য গুদাম অফিস। কামরুলই হলো চাল জালিয়াতির মূল কারিগর। তার ওপর কেউ কথা বলতে সাহস পায়নি এমনকি পরিদর্শকও। তার সাথে সখ্যতা রয়েছে বিভিন্ন অসাধু ডিলার ও পাইকারী চাল ব্যবসায়ীদের।
তার চাল পাচারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে রয়েছে খুরুশকুল রোডের সাগর এন্টারপ্রাইজের মালিক শ্রীমন্ত পাল সাগর, চাল বাজারের এসবি এন্টারপ্রাইজের মালিক বুলবুল তালুকদার, রফিক, সেলিম রেজা, মুজিব, আবদুর রহিম, আলমসহ আরও কয়েকজন। এই সিন্ডিকেট অল্প দিনেই বনেছে শূণ্য থেকে কোটিপতি।

জানা গেছে, খাদ্যগুদামে একই পদে ৮ বছর ধরে দায়িত্বে পালন করে খাদ্যগুদামকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে কামরুল এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। তার নিয়ন্ত্রণে ১৫/২০ জনের একটি বাহিনী। এই বাহিনীর ভয়ে কামরুলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার কেউ সাহস করে না। স্থানীয় বল প্রয়োগ এবং রাজনীতির ক্ষমতা দেখিয়ে তিনি খাদ্যগুদামের সকলকে জিম্মি করে রেখেছে। কক্সবাজার খাদ্যগুদামে যোগদানের পর থেকে তার নেতৃত্বে অব্যাহত রয়েছে অনিয়ম দুর্নীতি। এখানকার দুর্নীতি নিয়ে একাধিবার অভিযান চললেও পরক্ষণে তা ভাটা পড়ে যায়। গুদামের চাল কেলেঙ্কারির প্রমাণও পেয়েছেলো চট্টগ্রাম বিভাগীয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিদর্শন দল। তবুও থামছে না এখানকার অনিয়ম ও দুর্নীতি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, চাল পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।